ইদুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে ।
ধান ও গম ক্ষেতে এরা বেশী ক্ষতি করে থাকে । ধান গাছের কান্ড তেরছা করে (৪৫ ডিগ্রি কোণে
) কেটে দেয় । গাছের শীষ বের হলে শীষ বাকিয়ে নিয়ে কচি ও পাকা শীষ গুলো কেটে দেয় ।
ব্যবস্থাপনা:
ইঁদুরের ক্ষয়ক্ষতির ধরণ ব্যাপকতা ও দমন প্রক্রিয়া
অন্যান্য বালাই থেকে সম্পূর্ন আলাদা ও কৌশলগত । তাই স্থান কাল পাত্র ভেদে কৌশলের সঠিক
ও সমন্বিত দমন পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ইঁদুর নিধন করা যায় । এতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি,
ইঁদুর বাহিত রোগ ও পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব হয় । তবে ইদুরকে সঠিক ভাবে মোকাবেলা
করার জন্য সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আশা একান্ত প্রয়োজন।
(ক)
অ-রাসায়নিক দমনঃ
০১. ইদুরের গর্ত খুড়ে ইদুর পিটিয়ে মেরে ফেলা
।
০২. ইদুরের গর্তে পানি ঢেলে ইঁদুর বের করে
মেরে ফেলা ।
০৩. ইদুরের গর্তে মরিচ পোড়া গন্ধ দিয়ে ইঁদুর
মারার ব্যবস্থা করা ।
০৪. নিবিড় ফাঁদ পাতা: বিভিন্ন ধরনের ফাদ পেতে
ইঁদুর নিধন করা ।
০৫. আঠা ব্যবহার করে: ইদুর ধরার জন্যে গুদামে
বা ঘরে এক প্রকার আঠা সাধারণত: কাঠেরবোর্ডে, মোটা শক্ত কাগজে, টিনে, লাগিয়ে ইদুর চলাচলের
রাস্তায় ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায় । বোর্ডের মাঝখানে লোভনীয় খাবার রাখতে হবে ।
(খ)
রাসায়নিক দমনঃ
এ ধরন বিষটোপ ইঁদুর একবার খেলেই কয়েক ঘন্টা
মধ্যে মারা যায় । যেমনঃ গমে মিশ্রিত জিংক ফসফাইড (২%) বিষটোপ ।
প্রয়োগ কৌশলঃ জিংক ফসফাইড অমিশ্রিত গম কয়েকদিন
দিয়ে অভ্যাস করে হঠাত একদিন <২% জিংক ফসফাইড মিশ্রিত গম প্রদান করা ।
সমস্যাঃ
বিষটোপ লাজুকতা দেখা দিতে পারে যদি ইদুরগুলো
সরিয়ে ফেলা না হয় । বিষটোপ খেয়ে ইদুর মরে পরে আছে, এটা দেখে জীবিত ইদুরের ঐ বিষটোপ
খাওয়ার অনিহাই হলো বিষটোপ লাজুকতা ।
ইদুর
দমনের উপযুক্ত সময়ঃ
০১. যে কোন ফসলের থোড় আসার পূর্বে । এ সময়
মাঠে ইঁদুরের সংখ্যা এবং এদের খাবার কম থাকে বিধায় ইদুর বিষটোপ সহজে খেয়ে থাকে ।
০২. ঘর বাড়িতে সারা বছর ব্যাপি ও বর্ষার সময়
।
০৩. বর্ষার সময় রাস্তাঘাট ও বাধে (যখন মাঠে
পানি থাকে)
০৪. গভীর ও অগভীর সেচের নালায় প্রথম পানি
ছাড়ার দিন ।
জৈবিক
দমন পদ্ধতিঃ
জীব দিয়ে ইদুর দমনের কৌশল এ পদ্ধতির অর্ন্তভূক্ত
। বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক শত্রু যেমন: শিয়াল, বেজি, বন বিড়াল, সাপ, গুইসাপ, পেচা এসব
দিয়ে ইদুর মারা যায় । কাজেই ইদুর ভোজী প্রাণীদের বংশ বিস্তারের যথাযথ ব্যবস্থা করতে
হবে।
কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
১.ক্ষেতের আশপাশ অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না
২. একই দমন ব্যবস্থা বারবার ব্যবহার করবেন
না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. ক্ষে্তে থোড় আসার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ
করুন
২. সবাই মিলে একত্রে সমন্বিত ভাবে ইঁদুর দমন
করুন
৩. মাঠে সবাই মিলে একসাথে ফসল চাষ করে একসাথে
কেটে আনুন। তাহলে খাবার না পেয়ে অনাহারে থাকলে, ইদুরের জন্মহার কমে যাবে ।
লক্ষণ:
এই পোকা মাটিতে গর্ত করে গাছের গোড়া কেটে
ক্ষতি করে ।
ব্যবস্থাপনা:
• জমিতে প্লাবন সেচ দেওয়া
* অধিক আক্রমণের ক্ষেত্রে দানাদার কীটনাশক
ব্যবহার করা যেতে পারে ।
পিপিলিকার উপস্থিতি এ পোকার উপস্থিতিকে অনেক ক্ষেত্রে জানান দেয় ।এ পোকা পাতা, গাছ ও কচি দানার রস চুষে খায়। এর আক্রমন বেশি হলে শুটি মোল্ড ছক্রাকের আক্রমন ঘটে এবং গাছ মরে যায় ।
এর প্রতিকার হল
১. হাত দিয়ে পিশে পোকা মেরে ফেলা।
২. আক্রান্ত পাতা অপসারণ করা।
৩. পরভোজী পোকা যেমন : লেডিবার্ডবিটল লালন।
৪. ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
৫. প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকার আক্রমণ হলে ম্যলাথিয়ন গ্রুপের ফাইফানন ৫৭ ইসি অথবা আসাটন ৫৭ ইসি ২ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।
কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
১. বিলম্বে গম বপন করবেন না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. আগাম গম বপন করুন
২. উন্নত জাতের গম বপন করুন ।
লক্ষণ :
প্রথমে নীচের পাতাতে ছোট ছোট বাদামি ডিম্বাকার দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগ সমূহ আকারে বাড়তে থাকে এবং গমের পাতা ঝলসে দেয়। রোগের জীবাণু বীজে কিংবা ফসলের পরিত্যক্ত অংশে বেঁচে থাকে। বাতাসের অধিক আদ্রতা এবং উচ্চ তাপমাত্রা (২৫ ডিগ্রী সে.) এ রোগ বিস্তারের জন্য সহায়ক।
প্রতিকারঃ
১. হেক্সাকোনাজল গ্রুপের কনটাফ ৫ ইসি বা ফরয়ার্ড ৫ ইসি ১ মিলি প্রতি ২ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ।
কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
১. বিলম্বে গম বপন করবেন না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২. প্রতি কেজি গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম নোইন মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
৩. ফসলের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
লক্ষণ :
প্রথমে নীচের পাতাতে
ছোট ছোট গোলাকার হলুদাভ দাগ পড়ে। পরবর্তীতে দাগ সমূহ মরিচার মত বাদামী বা কালচে রং
এ পরিনত হয় । রোগের লক্ষণ প্রথমে নিচের পাতায় দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে সব পাতা ও কান্ডে
দেখা দেয়।
প্রতিকারঃ
১. আকোনাজল বা
ক্রিজল ১ মি.লি. বা টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১২ দিন
পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
১. বিলম্বে গম
বপন করবেন না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. রোগমুক্ত জমি
হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২. প্রতি কেজি
গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম নোইন মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
৩. ফসলের পরিত্যক্ত
অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
লক্ষণ :
এ পোকা গমের কুশি / মাইজ কেটে দেয়। আক্রান্ত কুশি হলুদ হতে থাকে এবং এক সময় মারা যায় ।
প্রতিকার :
১. আক্রান্ত কুশি সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
২. কারটাপ গ্রুপের কাটাপ ৫০ এসপি বা কারটাপ ৫০ এসপি ২.৫ গ্রাম./ লি. হারে বা কার্বোসালফান গ্রুপের মারশাল ২০ ইসি ২মি. লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
৩. কার্বোফুরান ১০ কেজি / হে. হারে প্রয়োগ করা।
লক্ষণ
:
এ রোগের আক্রমণে গমের শীষে কালো বর্ণের প্রচুর
পরিমাণে পাউডারের মত বস্তু দেখা যায়। আক্রমণ বেশি হলে গমের দানাগুলো ঝড়ে যায় এবং শীষটি
গমশুন্য দন্ডে পরিনত হয়।
প্রতিকারঃ
১. কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশক যেমন:
ব্যাভিস্টিন ১গ্রাম হারে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ।
কৃষকের
আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন
না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
১. রোগমুক্ত জমি হতে বীজ সংগ্রহ করতে হবে।
২. প্রতি কেজি গম বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম নোইন
বা প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম ব্যাভিস্টিন মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
৩. ফসলের পরিত্যক্ত অংশ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে
ফেলতে হবে।
লক্ষণ:
এ পোকা পূর্ণ বয়স্ক
ও নিস্ফ উভয় অবস্থায় ক্ষতি করে । দুধ আসা অবস্থায় ক্ষতি বেশী করে । ফলে গমের গায়ে দাগ
হয় ও গম চিটা হয় ।
ব্যবস্থাপনা:
আক্রমণ বেশি হলে
যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করা যেমন: ম্যালাথিয়ন ২ মিলি বা ক্লোরপাইরিফস (ডার্সবান)
বা ডাইমেথোয়েট (টাফগর) বা কারবারিল (সেভিন) ২ গ্রাম /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে
করা ।
কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)
পরবর্তীতে যা যা করবেন না
অতি বিলম্বে বা
অতি অগ্রিম গম চাষ করবেন না
পরবর্তীতে যা যা করবেন
ক্ষেত আগাছা মুক্ত
রাখুন