লক্ষণ

ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতায় একত্রে গাদা করে থাকে এবং পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে । এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা জালের মত হয়ে যাওয়া পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায় । কয়েক দিনের মধ্যে এরা ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বড় বড় ছিদ্র করে পাতা খেয়ে ফেলে ।

 

প্রতিকার

* কীড়াসহ গাছ থেকে পাতা ছিড়ে নিয়ে পা দিয়ে পিষে পোকা মেরে ফেলতে হবে

* ছড়িযে পড়া বড় কীড়াগুলোকে ধরে ধরে মেরে ফেলতে হবে । এভাবে অতি সহজেই এ পোকা দমন করা যায় ।

* চারা লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে ।

* ফেরোমন ফাঁদ পাতার পরও যদি আক্রমণের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় তবে জৈব বালাইনাশক এসএনপিভি প্রতি লিটার পানিতে ০.২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।

* প্রতি সপ্তাহে একবার করে কীড়া নষ্টকারী পরজীবী পোকা, ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে অবমুক্তায়িত করলে এ পোকার আক্রমণের হার অনেকাংশে কমে যায়।

* আক্রমণ বেশি হলে স্পর্শ বিষ যেমন সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ( সুপারথ্রিন -১০ ইসি বা সিমবুশ -১০ ইসি বা ফেনম বা রাইস ইত্যাদি ) প্রতি ১০ লিটার পানির সাথে ১০ মিলি হারে মিশিযে ১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে ।


ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। এতে পাতায় ও ফলে দাগ দেখা যায় এবং শুকিয়ে ফেটে যেতে থাকে ।

 

এর প্রতিকার হল:

১. আক্রান্ত ফল,পাতা ও ডগা অপসারণ করা।

২. (এজোক্সিস্ট্রবিন+ ডাইফেনকোনাজল ) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন:এমিস্টার টপ ৩২.৫ ইসি বা এডিটপ ৩২.৫ ইসি ১ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. ক্ষেত অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১.রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা

২. বীজ লাগানোর আগে প্রোভ্যাক্স প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করা ।


এরা পাতার রস চুষে খায় তাই পাতা বিন্দু বিন্দু হলুদে দাগের মত হয়ে পড়ে সাদাটে হয়ে যায়।অতি ক্ষুদ্র মাকড় পাতার উল্টো দিকে দেখা দেয়।কখনও কখনও এরা এক যায়গায় ঘনভাবে জড় হয়। তখন এদের সহজেই খালি চোখে দেথা যায়।

এর প্রতিকার হল:

১. ক্ষেত থেকে মাকড় বা ডিমসহ আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা/ ডাল কেটে দেয়া অপসারণ করা

২. জমিতে পরিমিত পরিমানে জৈবসার প্রয়োগ করা ।

৩. পানি স্প্রে করা বা স্প্রিংলার সেচ দেয়া

৪. মাকড় নাশক বা সালফার যেমন: থিওভিট/ কুমুলাস/ ভার্টিমেক বা ইনসাফ ইত্যাদি যে কোন একটি ২ মিলি বা ২ গ্রাম /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা

লক্ষণ:

কীড়া অবস্থায় পাতা খেয়ে বড় বড় ছিদ্র করে । এটি সাধারণত কচি পাতাগুলো আক্রমণ করে থাকে

 

প্রতিকার :

ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ।

* ক্ষেতে ডাল পুতে পাখি বসার ব্যবস্থা করা ( বিঘা প্রতি ৮-১০ টি)

আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে সুমিথিয়ন বা ফলিথিয়ন-২ মিঃলিঃ মিশিয়ে ভালভাবে স্প্রে করা ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা


এ পোকা পাতা, ডগা ও কচি বোলের রস চুষে খায়। এর আক্রমণ বেশি হলে শুটি মোল্ড ছত্রাকের আক্রমণ ঘটে এবং গাছ দুর্বল হয়ে যায় ।

এর প্রতিকার হল:

১. প্রাথমিক অবস্থায় হাত দিয়ে পিশে পোকা মেরে ফেলা

২. স্বজোড়ে পানি স্প্রে করা।

৩. পরভোজী পোকা যেমন: লেডিবার্ডবিটল লালন।

৪. ডিটারজেন্ট পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা

৫. প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকার আক্রমণ হলে গেইন ২০ এসএল বা সাইপারফস ৫৫ ইসি ২ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

 

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম তুলা বপন করুন

২. উন্নত জাতের তুলা বপন করুন ।

লক্ষণ

পূর্ণ বয়স্ক ও বাচ্চা উভয়ই ক্ষতি করে । চারা গাছ থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত এরা পাতার রস খায় । আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয় । পাতা হলুদ হতে তামা রং হয় এবং পরে শুকিয়ে যায় ।

 

প্রতিকার

·      হাত জাল দ্বারা পোকা সংগ্রহ ।

·      পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ ।

·      ফাঁদ শস্য যেমন ঢেঁড়স ক্ষেতের চারদিকে বেগুন লাগানো ।

·      আক্রান্ত গাছে ছাই ছিটানো

·      ০.৫% ঘনত্বের সাবান পানি অথবা ৫ মিলি তরল সাবান প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।

·      ক্ষেতে মাকড়সা সংরক্ষণ করা (১টি মাকড়সা গড়ে দিনে ২-১৫টি জ্যাসিড শিকার করে খায় ।

·      ৫০০ গ্রাম নিম বীজের শাঁস পিষে ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তা ছেঁকে জ্যাসিড আক্রান্ত ক্ষেতে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে ।

·      পোকা দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ডায়মেথোয়েট ৪০ ইসি (রগর, টাফগর, সানগর, পারফেকথিয়ন)১মিঃলিঃ এডমায়ার ১ মিঃলিঃ মেটাসিস্টক্স ১ মিঃলিঃ সবিক্রন ১মিঃলিঃ, এসাটাফ- ১.৫ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করুন

লক্ষণ

সাধারণত চারা রোপনের ৪/৫ সপ্তাহের মধ্যেই এ পোকারা আক্রমণ শুরু হতে দেখা যায় । এই পোকার আক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে জমিতে সদ্য নেতিয়ে ডগা চোখে পড়ে ।

 

প্রতিকার

১. সপ্তাহে অন্ততঃ একবার পোকা আক্রান্ত ডগা বাছাই করে বিনষ্ট করতে হবে ।

২. ফেরোমন ফাঁদের ব্যবহারঃ চারা রোপনের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে। (প্রতি শতাংশে ১টি)

৩. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে জৈব বালাইনাশক, স্পেনোসেড ( ট্রেসার ৪ মিলি./ ১০ লি. পানি হারে ) স্প্রে করতে হবে । গাছের ফুল আসার সময় হতে প্রতি ২ সপ্তাহ অন্তর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে ।

৪. প্রতি ১৫ দিন পর পর উপকারী পোকা, ট্রাইকোগ্রামা, কাইলোনিজ ও ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করতে হবে ।

৫. আক্রমণের মাত্রা বেশী হলে ভলিয়াম ফ্লাক্সি ৩০০ এসসি প্রতি লিটার পানিতে ০.৫ মিঃলিঃ হারে বা কারটাপ গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সানটাপ ২.৪ গ্রাম/ লি. হারে বা সাইপামেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা ফেনকর্ড বা ম্যাজিক বা কট ০.৫ মিলি./ লি হারে বা ডেল্টামেথ্রিন গ্রুপের কীটমাশক যেমন: ডেসিস বা ক্র্যাকডাউন ১ মিলি./ লি হরে বা এ পোকার জন্য অন্যান্য অনুমোদিত রাসায়নিক কীটনাশক ১০-১২ দিন পর পর ৪-৫ বার স্প্রে করতে হবে ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা


লক্ষণ

কীড়া অবস্থায় পাতা মোড়ায় এবং সবুজ অংশ খায় । এটি সাধারণত কচি পাতাগুলোতে আক্রমণ করে থাকে

ব্যবস্থাপনা :

ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ।

পোকাসহ আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।

# আলোক ফাঁদের সাহায্যে পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে মেরে ফেলা।

# জমিতে ডালপালা পুঁতে পোকাখেকো পাখির সাহায্যে পূর্ণ বয়স্ক মথ দমন করা।

# শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা যেমন: ডারসবান ২০ ইসি ২ মি.লি./ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. বিলম্বে তুলা বপন করবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম তুলা বপন করুন

২. উন্নত জাতের তুলা বপন করুন ।


ক্ষুদ্র কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়।

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংশ করা বা পুড়ে ফেলা।

২. আঠালো হলুদ ফাঁদ স্থাপন করা ।

৩. সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক (যেমন: কট ১০ ইসি) ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।


এ পোকা দেখতে লম্বাটে গোল এবং হালকা গোলাপী রংঙের, পোকাগুলো একসাথে থাকে ও এদের উপরিভাগ সাদা তুলার মতো গুড়া দ্বারা আবৃত থাকে। ছাতরা পোকা গাছের এরা গাছের ডগায় দল বেঁধে বাস করে এবং কচি ডগা ও পাতার রস চুষে খায়। ফলে কচি ডগা ও পাতাগুলো কুঁকড়ে যায় । পোকার আক্রমণের দরুন ফলন কম হয়।

 

প্রতিকার

পোকাসহ আক্রান্ত ডগা, পাতা ও ডাল দেখা মাত্রা তা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।

আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ম্যালাথিয়ন বা সুমিথিয়ন ২ মিঃলি মারসাল ২০ ইসি ১মিঃলিঃ ডায়ামেথয়েট ৪০ ইসি ২মিঃলিঃ মিশিয়ে স্প্রে করা ।


এ রোগ হলে গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়।

এর প্রতিকার হল

১. ক্ষেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলা/ ডাল কেটে দেয়া

২. জাব পোকা এ রোগের বাহক, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: এডমায়ার ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।


এ পোকা দেখতে লম্বাটে ও লাল রংঙের। এরা বোল বা ফলের রস চুষে খায়। এ পোকার আক্রমণে অনেক সময় তুলার রং নষ্ট হয়।

 

প্রতিকার

পোকাসহ আক্রান্ত ডগা, পাতা ও ডাল দেখা মাত্রা তা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।

আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ম্যালাথিয়ন বা সুমিথিয়ন ২ মিঃলি মারসাল ২০ ইসি ১মিঃলিঃ ডায়ামেথয়েট ৪০ ইসি ২মিঃলিঃ মিশিয়ে স্প্রে করা।


লক্ষণ : এরা পাতার রস চুষে খায় ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। পাতায় অসংখ্য সাদা সাদা পাখাযুক্ত মাছি দেখা যায় ।ঝাকি দিলে পোকা উড়ে যায়

 

প্রতিকার :

১. সাদা আঠাযুক্ত বোর্ড স্থাপন বা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা।

২. নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করা।

৩. 50 গ্রাম সাবানের গুড়া 10 লিটার পানিতে গুলে পাতার নিচে সপ্তাহে 2/3 বার ভাল করে স্প্রে করা। সাথে 5 কৌটা গুল (তামাক গুড়া) পানিতে মিশিয়ে দিলে ফল ভাল পাওয়া যায়।

৪. সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসাবে অনুমোদিত বালাইনাশক ব্যবহার করা। যেমন এডমায়ার 0.5 মিলি বা 0.25 মিলি ইমিটাফ বা 2 মিলি টাফগর/রগব/সানগর প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা