লক্ষণ

পাতার উপর ফ্যাকাসে অথবা ফিকে সবুজ রংয়ের গোলাকার অথবা এলোমেলো পানি ভেজা দাগ পড়ে । কুয়াশাচ্ছন্ন ও মেঘলা আবহাওয়ায় দাগ সংখ্যা ও আকার দ্রুত বাড়তে থাকে । বাদামী থেকে কালচে রং ধারণ করে । রোগের আক্রমণ বেশী হলে গাছের কান্ডেও রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় । রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার ৩-৪ দিনের মধ্যে গাছ ঝলসে যায় ও দ্রুত মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে ।

 

প্রতিকার

• পরিমিত সার ব্যবহার করা , সকালে সেচ প্রয়োগ করা ও উত্তম নিষ্কাষণ ব্যবস্থা রাখা।

• রোগের অনুকুল পূর্বাভাস (কুয়াশাচ্ছন্ন ও মেঘলা আবহাওয়ায় ) পাওয়া মাত্র প্রতিরোধক হিসাবে (ম্যানকোজেব + মেটালেক্সিল) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: রিডোমিল গোল্ড বা করমি বা মেটারিল বা ম্যানকোসিল বা ক্রেজি প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করা

 রোগের আক্রমণ বেশী হলে প্রতি লিটার পানিতে-২ গ্রাম সিকিউর মিশিয়ে স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায় ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

২. একই জমিতে বার বার টমেটো চাষ করবেন না ।

৩. অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করবেন না

৪.শেষ বিকালে সেচ দিবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. সুস্থ, সবল ও রোগ সহনশীল জাত চাষ করা ।

২. সম্ভব হলে শোধন করা ব্যবহার করা

৩. নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করুন।

৪. সুষম সার প্রয়োগ করুন


লক্ষণ

সাদা মাছি দ্বারা ভাইরাস ছড়ায় । আক্রান্ত গাছ খর্বাকৃতি হয় । পাতার গায়ে টেউয়ের মত ভাজের সৃষ্টি হয় । বয়স্ক পাতা পুরু ও মচমচে হয়ে যায় । অতিরিক্ত শাখা প্রশাখা বের হয় ও ফুল ফল ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে ।

 

প্রতিকার

     আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।

·      রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা ।

·      রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত ব্যবহার করা ।

·        ভাইরাসের বাহক পোকা দমনেহার জন্য ডায়ামেথেয়ট, এসাটাফ, এডমেয়ার, টিডো, ইত্যাদি যে কোন একটি ১ মিলি /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা) ।


ছত্রাকের আক্রমনে এ রোগ হয়। এতে পাতার বোটায়, কান্ডে ও ফলে সাদা তুলার মত বস্তু দেখা যায় । এটি টমেটোর কোন মারাত্বক রোগ নয়।

 

এর প্রতিকার হল :

১. প্লাবন সেচের পরিবর্তে স্প্রিংলার সেচ দেয়া।

২. আক্রান্ত ফল,পাতা ও ডগা অপসারণ করা।

৩. বীজ লাগানোর আগে গভীরভাবে চাষ দিয়ে জমি তৈরী করা । ৪. প্রপিকোনাজলগ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ৩ বার শেষ বিকেলে স্প্রে করা।


লক্ষণ

বয়স্ক পাতায় রোগের লক্ষণ প্রথম দেখা যায় । আক্রান্ত পাতায় উপর কাল বা বাদামী রংয়ের বৃত্তাকার দাগ পড়ে । ক্ষত স্থানটি অনেকগুলি ছোট বড় বৃত্তের সমষ্টি । পাতার মত কান্ডে ও ফলেও বৃত্তাকার দাগ দেখা যায় ।

 

প্রতিকার

পরিমিত ও সময়মত সুষম সার ও সেচ প্রয়োগ করা এবং পাতায় ২/১টি দাগ দেখার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম আইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রোভরাল বা ডাইথেন এম ৪৫ স্প্রে করা ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

 

১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

২. একই জমিতে বার বার টমেটো চাষ করবেন না ।

পরবর্তীতে যা যা করবেন

 

১. সুস্থ, সবল ও রোগ সহনশীল জাত চাষ করা ।

২. প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম আইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রোভরাল বা গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ মিশিয়ে বীজ শোধন করা

৩. নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করুন।

৪. সুষম সার প্রয়োগ করুন


লক্ষণ

আক্রান্ত চারার গোড়ার চারদিকে দাগ দেখা যায় । গোড়ার সাদা ছত্রাকজালি ও অনেক সময় সরিষার মত ছত্রাকের অনুবীজ পাওয়া যায় । শিকড় পচে যায়, চারা নেতিয়ে পড়ে গাছ মারা যায় । স্যাতস্যাতে মাটি ও মাটির উপরিভাগ শক্ত হলে রোগের প্রকোপ বাড়ে । রোগটি মাটিবাহিত বিধায় মাটি, আক্রান্ত চারা ও পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে ।

 

প্রতিকার

বীজতলায় শুকনো কাঠের গুড়া পোড়ানো/ সরিষার খৈল ৩০০ কেজি/ হেঃ অথবা মাটি সোলারাইজেশন করা । বীজতলায় হেঃ প্রতি ২.০ টন ট্রাইকো-কম্পোস্ট ব্যবহার করা ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

 

১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা


লক্ষণ:

ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতায় একত্রে গাদা করে থাকে এবং পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে । এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা জালের মত হয়ে যাওয়া পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায় । কয়েক দিনের মধ্যে এরা ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বড় বড় ছিদ্র করে পাতা খেয়ে ফেলে ।

 

প্রতিকার:

১. যেহেতু পোকার কীড়া প্রথম দিকে দলবদ্ধ অবস্থায় থাকে সেজন্য প্রতিটি গাছ যত্ন নিয়ে দেখলেই পাতায় কীড়াসহ গাছ থেকে ছিড়ে নিয়ে পা দিয়ে পিষে মেরে ফেলতে হবে এবং ছড়িযে পড়া বড় কীড়াগুলোকে ধরে ধরে মেরে ফেলতে হবে। এভাবে অতি সহজেই এ পোকা দমন করা যায় ।

২. চারা লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাততে হবে ।

৩. ফেরোমন ফাঁদ পাতার পরও যদি আক্রমণের চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় তবে জৈব বালাইনাশক এসএনপিভি প্রতি লিটার পানিতে ০.২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।

৪. প্রতি সপ্তাহে একবার করে কীড়া নষ্টকারী পরজীবী পোকা, ব্রাকন হেবিটর পর্যায়ক্রমিকভাবে মুক্তায়িত করলে এ পোকার আক্রমণের হার অনেকাংশে কমে যায়

৫. আক্রমণ বেশি হলে স্পর্শ বিষ যেমন সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (সুপারথ্রিন, সিমবুশ, ফেনম রাইসন ইত্যাদি ১০ তরল) প্রতি ১০ লিটার পানির সাথে ১০ মিলি হারে মিশিযে ১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার গাছে স্প্রে করতে হবে ।


ক্ষুদ্র কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়।

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংশ করা বা পুড়ে ফেলা।

২. আঠালো হলুদ ফাঁদ স্থাপন করা ।

৩. সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক ( যেমন: কট ১০ ইসি) ১ মি.লি. / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

 

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা


পোকা ফল ছিদ্র করে ভিতরের অংশ খায়। ফল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।

 

এর প্রতিকার হল:

১. প্রতিদিন পোকাসহ আক্রান্ত ফুল বা ফল সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।

২. গাছের নিচে ঝরে পড়া ফুল, ফল ও পাতা সংগ্রহ করে মাটির নিচে পুতে ফেলা।

৩. সপ্তাহে একবার ডিম নষ্টকারী পরজীবী যেমন: ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিজ হেক্টর প্রতি ১ গ্রাম হারে এবং কীড়া নষ্টকারী পরজীবী যেমন: ব্রাকন হেবিটর হেক্টর প্রতি ১ বাংকার বা ৮০০-১২০০ টি পর্যায়ক্রমিকভাবে অবমুক্তায়িত করা

৪. প্রতি ১ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম আধাভাঙ্গা নিমবীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছেকে টমেটোর ফুল আসার পর থেকে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করা।

৫. অথবা আক্রমণ বেশি হলে সাইপারমেথ্রিন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিপকর্ড বা সিমবুশ ১ মি.লি. / লি. হারে বা এমামেকটিন বেনজোয়েড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: প্রোক্লেইম বা সাহাম ১ গ্রাম/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

 

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. বালাইনাশক ব্যবহারের আগে বালাইনাশকের গায়ে আটা লেবেল ভালভাবে পড়ুন।

 

আপনার ফসলের সমস্যাটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিস বা উপ সহকারি কৃষি অফিসারের সংগে যোগাযোগ করুন


তাপমাত্রার দ্রত পরিবর্তন, অতি পানি ঘাটতির পর হঠাৎ সেচ দেওয়া বা গাছের শরীরবৃত্তীয় কারণে কখনও কখনও টমেটো ফেটে যায়। এতে টমেটো খাবারের অযোগ্য হয়ে পড়ে

প্রতিকার :

১. জমিতে নিয়মিত সেচ দেওয়া

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করা

লক্ষণ

মাটির কাছাকাছি থাকা ফলের নিচের দিকে প্রথমে পঁচা শুরু হয় এবং ক্রমশ তা উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত স্থান মসৃণ হয় এবং গাঢ় বাদমি ও হালকা বাদামি রঙ্গের ব্যান্ড দেখা যায়।

 

প্রতিকার

রোগমুক্ত এলাকা হতে সুস্হ বীজ সংগ্হ করা । সুস্থ, সবল ও রোগ সহনশীল জাত চাষ করা । পরিমিত সার ব্যবহার ও সেচ প্রয়োগ করা । শস্য পূর্যায়ক্রম অনুসরণ করা ।

রোগের অনুকুল পূর্বাভাস পাওয়া মাত্র প্রতিরোধক হিসাবে ২ গ্রাম ম্যানকোজেব + মেটালেক্সিল (রিডোমিল গোল্ড, করমি, মেটারিল) জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা রোগের আক্রমণ বেশী হলে প্রতি লিটার পানিতে-২ গ্রাম সিকিউর মিশিয়ে স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায় ।


লক্ষণ

লিফ হোপার নামক পোকা দ্বারা ভাইরাস ছড়ায় । গাছের উপরের অংশ কুঁকড়ায়ে যায় । পাতা মুড়িয়ে যায় । পাতা মুড়িয়ে যায় ও চামড়ার ন্যায় পরু মনে হয় । গাছ আকৃতিতে ছোট হয় ।

 

প্রতিকার

আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা ।

রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করা ।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাত ব্যবহার করা ।

ভাইরাসের বাহক পোকা (সাদা মাছি) দমনের জন্য ডায়মেথেয়েট (পারফেকথিয়ন), এসাটাফ, এডমায়ার, টিডো, ইত্যাদি যে কোন একটি ১ মিলি /লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা) ।


লক্ষণ

পুষ্টি গ্রহন ক্ষমতা অপর্যাপ্ত হয় এবং ক্যালসিয়াম ট্রান্সলোকেশন কম হয় তখন এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায় । অনেক সময় ফলের প্রান্তে পানিভেজা দাগের সৃষ্টি হয়ে ক্রামান্বয়ে কালচে রং ধারণ করে ।

 

প্রতিকার

১. মাটির আদ্রতা রক্ষার জন্য মালচিং করা বা খড়, শুকনা কচুরিপানা ইত্যাদি দিয়ে মাটি ঢেকে দেয়া ।

২. পরিমিত ও সময়মত সুষম সার ও সেচ প্রয়োগ করা ।

৩. লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি চার কেজি ডলোচুন প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।