দীর্ঘ খরা হলে বা শুষ্ক ও গরম হাওয়ার ফলে শারীরবৃত্তীয় কারণে অথবা মাটি অধিক শক্ত থাকলে অথবা হঠাৎ সেচ দেয়া বা অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার বা হরমোন প্রয়োগের কারণে গাজর ফেটে যেতে পারে ।

 

এর ব্যবস্থাপনা হল:

১. খরা মৌসুমে নিয়মিত পরিমিত সেচ দেওয়া

২. পর্যাপ্ত জৈব সার প্রয়োগ করা।


লক্ষণ

এ পোকা গাজর কেটে দেয়। সকাল বেলা চারা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।

প্রতিকার :

১। সকাল বেলা কেটে ফেলা চারার আশে পাশে মাটি খুরে পোকা বের করে মেরে ফেলা ।

২. অধিক আক্রান্ত জমিতে ফিপ্রোনিল/ ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিজেন্ট ৩ জি আর ১০ কেজি / হে. হারে প্রয়োগ করা।


লক্ষণ

এ পোকা রাতের বেলা চারা মাটি বরারবর কেটে দেয়। সকাল বেলা চারা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায় ।

 

প্রতিকার :

১। সকাল বেলা কেটে ফেলা চারার আশে পাশে মাটি খুরে পোকা বের করে মেরে ফেলা ।

২। কেরোসিন মিশ্রিত পানি সেচ দেয়া।

৩। পাখি বসার জন্য ক্ষেতে ডালপালা পুতে দেয়া।

৪। রাতে ক্ষেতে মাঝে মাঝে আবর্জনা জড়ো করে রাখলে তার নিচে কীড়া এসে জমা হবে, সকালে সেগুলোকে মেরে ফেলা।

৫। আক্রান্ত জমিতে ফিপ্রোনিল/ ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রিজেন্ট ৩ জি আর ১০ কেজি / হে. হারে বা মিমব্যান ২০ ইসি বা ক্লাসিক ২০ ইসি বা বাইপোলার ৫০ ইসি বা সার্টার ৫০ ইসি ১.৫ মি.লি. / লি. বা পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি ৩.৫ মিলি. / লি হারে পানিতে মিশিয়ে শেষ বিকেলে স্প্রে করা।


লক্ষণ:

আক্রান্ত গাছের পাতার গোড়ায়/ বোটায় কলো দাগ দেখা যায়। গাজরের গায়ে গর্ত হয়ে পচতে দেখা যায় ।

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. রোভরাল ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।


লক্ষণ:

আক্রান্ত চারার গোড়ার চারদিকে পানিভেজা দাগ দেখা যায় । গোড়ার সাদা ছত্রাকজালি ও অনেক সময় সরিষার মত ছত্রাকের অনুবীজ পাওয়া যায় । শিকড় পচে যায়, চারা নেতিয়ে পড়ে গাছ মারা যায় । স্যাতস্যাতে মাটি ও মাটির উপরিভাগ শক্ত হলে রোগের প্রকোপ বাড়ে । রোগটি মাটিবাহিত বিধায় মাটি, আক্রান্ত চারা ও পানির মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে ।

 

প্রতিকার:

১. পরিমিত সেচ ও পর্যাপ্ত জৈব সার প্রদান করা ও পানি নিস্কাশনের ভাল ব্যবস্থা রাখা

২. সরিষার খৈল ৩০০ কেজি/ হেঃ হারে জমিতে প্রয়োগ করা

৩. প্রতি লিটার পানিতে ইপ্রোডিয়ন বা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রোভরাল ২ গ্রাম বা ব্যাভিস্টিন ১ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করে মাটিসহ ভিজিয়ে দেয়া

৪. বীজতলায় হেঃ প্রতি ২.০ টন ট্রাইকো-কম্পোস্ট ব্যবহার করা ।


লক্ষণ:

আক্রান্ত গাজরের গায়ে উচু এবড়ো থেবড়ো দাগ দেখা যায় ।এতে ফলনে তেমন প্রভাব না পড়লেও বাজার দর কম হয়

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. রোভরাল অথবা কপার অক্সিক্লোরাইড ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।


লক্ষণ:

আক্রান্ত গাজর নরম হয়ে পচে যায়। পচা গাজর থেকে এক ধরণের গন্ধও বের হয় ।

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. কপার অক্সিক্লোরাইড ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

১. একই জমিতে বার বার গাজর চাষ করবেন না

২. আক্রান্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন :

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. জমিতে কয়েকবার দানাদার ফসল চাষ করে আবার গাজর চাষ করা

৪. বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিস্কার রাখা ও ফসলের পরিত্যাক্ত অংশ ধ্বংস করা


পাতা ও গাছের গায়ে সাদা পাউডারের মত দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে । আক্রান্ত বেশী হলে পাতা হলুদ বা কালো হয়ে মারা যায় ।

 

প্রতিকার :

১. সম্ভব হলে গাছের আক্রান্ত অংশ সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন।

২. ক্ষেত পরিস্কার রাখুন এবং পানি নিস্কাষনের ভাল ব্যবস্থা রাখুন।

৩. (ম্যানকোজেব+মেটালোক্সিল) গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: রিডোমিল গোল্ড ২ গ্রাম/ লিটার হারে অথবা সালফার ছত্রাক নাশক যেমন কুমুলাস ৪ গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট বা থিওভিট ২ গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাক নাশ যেমন: গোল্ডাজিম ০.৫ মিলি. বা এমকোজিম বা কিউবি বা চ্যামপিয়ন ২ গ্রাম/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

২. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

৩. এলোপাতারি বালাইনাশক ব্যবহার করে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করবেন না

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১. আগাম বীজ বপন করুন

২. সুষম সার ব্যবহার করুন

৩. রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন: বারি উদ্ভাবিত/ অন্যান্য উন্নত জাতের চাষ করুন

৪. বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিস্কার রাখুন

 

আপনার ফসলের সমস্যাটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে নিকটস্থ উপজেলা কৃষি অফিস বা উপ সহকারি কৃষি অফিসারের সংগে যোগাযোগ করুন


লক্ষণ:

আক্রান্ত পাতায় গায়ে সবুজ-বাদামি থেকে বাদামী রংগের ছোট ছোট দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে একাধিক দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগ হয় এবং পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। পাতার বোটায়ও দাগ দেখা যায় ।

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. রোভরাল অথবা কপার অক্সিক্লোরাইড ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না :

১. স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না

২. আক্রান্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না

 

পরবর্তীতে যা যা করবেন :

১. আগাম বীজ বপন করা

২. সুষম সার ব্যবহার করা

৩. রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন: বারি জাতের চাষ করা

৪. বিকল্প পোষক যেমন: আগাছা পরিস্কার রাখা


লক্ষণ:

আক্রান্ত পাতার কিনারায় হলুদ-বাদামি থেকে বাদামী রংগের ছোট ছোট দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে একাধিক দাগ একত্রিত হয়ে বড় দাগ হয় এবং পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। পাতার ঝলসে যায় এবং আগা বাঁকা হয়ে যায় ।

 

প্রতিকার :

১. আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. কপার অক্সিক্লোরাইড ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।


লক্ষণ:

গাজরের প্রধান শিকড়ের আগায় অথবা গাজরের গায়ে শিকড়ে পচন শুরু হয় এবং ক্রমশঃ উপরের দিকে পচতে থাকে। গাজেরের গায়ে মাটি লেগে থাকেতে যায় ।

প্রতিকার :

১. আক্রমণের শুরুতেই আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে নষ্ট করা ।

২. রোভরাল বা কপার অক্সিক্লোরাইড ২ গ্রাম/প্রতি লিটার পানি মিশিয়ে স্প্রে করা ।


লক্ষণ:

একধরনের ছত্রাকের আক্রমণে গাছের গোড়ায় বা কান্ডে পচন ধরে এবং ছত্রাকের সাদা মাইসেলিয়া ও সরিষার দানার মত স্কেরোশিয়া দেখা যায়। গাছ আস্তে আস্তে নেতিয়ে পড়ে । পরবর্তীতে পুরো গাছ মারা যায়।

প্রতিকার :

* সম্ভব হলে আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংশ করা বা পুড়ে ফেলা।

চারা গজানোর পর অতিরিক্ত সেচ না দেওয়া ।

ট্রাইকোডারমা ভিড়িডি ৩০ গ্রাম /৫০০ গ্রাম হারে গোবরের সাথে মিশিয়ে মাটিতে প্রয়োগ করা ।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন

১ আক্রান্ত জমিতে কয়েকবার দানা জাতীয় ফসল চাষ করে আবার শিম চাষ করুন

২. ফসল সংগ্রহের পর পুরাতন গাছ ও আবর্জনা আগুনে পুড়িয়ে দিন।

৩.জমি তৈরি করার সময় জমি গভীরভাবে চাষ দিন

৪. বপনের পূর্বে বীজ শোধন করা (ভিটাভেক্স-২.৫ গ্রাম বা ব্যাভিষ্টিন- ২ গ্রাম / কেজি বীজ)ট্রাইকোডারমা ভিড়িডি (৩-৪ গ্রাম/ কেজি বীজ) দ্বারা শোধন করা ।