এটি নারিকেলের জন্য তেমন ক্ষতিকর না হলেও কখনও কখনও শিকড় ও কান্ড খেয়ে ক্ষতি করে। নার্সারিতে নারিকেলের খোসা খেয়ে চারার ক্ষতি করে । এর

প্রতিকার হল:

রানীপোকাসহ উঁইপোকার ঢিবি ধ্বংস করা ।

* খাদ্য ফাঁদ ব্যবহার করা ( মাটির হাড়িতে পাট কাঠি, ধৈঞ্চা রেখে জমিতে পুতে রেখে পরে তুলে উঁইপোকাগুলো মেরে ফেলা)

* নার্সারিতে সেচ দিয়ে কয়েকদিন পানি ধরে রাখা ।

* গাছে উঁইপোকার মাটি সরিয়ে দিয়ে পোকা মেরে ফেলা সম্ভব হলে পানি দিয়ে ধুইয়ে গাছ পরিস্কার করে দেয়া ।

* অতি আক্রমণের ক্ষেত্রে ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডার্সবান ৫ মিলি./ লি হারে পানিতে মিশিয়ে কান্ডে ও গোড়ার মাটিতে স্প্রে করা ।

 


লক্ষণ :

এ পোকা নারিকেলের মাইজ পাতা বের হবার আগে ভিতরে কেটে দেয় ফলে ত্রিভুজের মত নকশা করে কাটা পাতা বের হয় । পূর্ণ বয়স্ক পোকা গাছের মাথায় আক্রমণ করে ও কান্ড ছিদ্র করে ঢুকে ভিতরের কোষ কলা খেতে থাকে।

 

প্রতিকার :

# গোবরা বা কমপোষ্টের পিট গাছের নিচ থেকে সরানো।

# ছিদ্রে শিক ঢুকিয়ে খুচিয়ে পোকা মারা।

# আক্রান্ত গাছের নিচে মাটির চাড়িতে পচা খৈইল পানিতে গুলে বা ভেরেন্ডা বীজের গুড়া পানিতে জাল দিয়ে দ্রবণ তৈরী করে দিলে পোকা তার ভিতরে মারা যায় ।

# প্রাপ্যতা সাপেক্ষে হেক্টর প্রতি ৫টি হারে ফেরোমন ফাঁদ ( যেমন: রাইনো লিউর) স্থাপন করা।

# সবচেয়ে ভিতরের পাতার গোড়ায় নিমের নির্ঝাস প্রয়োগ করা বা কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সেভিন ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

# বীজতলার ক্ষেত্রে ন্যাফথলিনের ১০ গ্রামের বল বালু দিয়ে ঢেকে (৩-৪ মিটার পর পর ৩-৪ টি হারে) জায়গায় জায়গায় রেখে দেওয়া।

 

কৃষকের আচরণগত পরিবর্তন যোগাযোগ (এফবিসিসি)

পরবর্তীতে যা যা করবেন না

১. বাগান অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না

২. বাগানের কাছে গোবরা বা কমপোস্টের পিট তৈরি করবেন না, তীব্র বাতাসের প্রবাহের সময় বালাইনাশক প্রয়োগ করবেন না

 

পরবর্তীতে যা যা করবেন

 

১.বাগানে সুষম সার প্রয়োগ করুন

২. গোবর বা কম্পোস্ট প্রয়োগের আগে তা কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সেভিন ১ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে শোধন করে নিন

৩. নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।


এ রোগের আক্রমণে পুরোনো পাতার উপর হলুদ দাগ পড়ে। দাগের চারি দিকে ধুসর বর্ণের বেষ্টনি থাকে।

প্রতিকার :

  • আক্রান্ত পাতা কেটে নষ্ট করা বা পুড়ে ফেলা।
  • সুষম সার ব্যবহার করা।
  •  আক্রান্ত গাছে প্রপিকোনাজল গ্রুপের টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি/লি বা প্রোটাফ ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি/লি  পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

 


লক্ষণ :

কচি নারিকেল কালো হয়ে ঝরে পড়ে।

 

প্রতিকার :

# গাছ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।

# আক্রান্ত নারিকেল সংগ্রহ করে পুতে ফেলা।

# আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম কুপ্রাভিট বা ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ বা বর্দোমিকচার (১%) মিশিয়ে স্প্রে করা।

 


লক্ষণ :

এ রোগের আক্রমণে কচি পাতা প্রথমে বিবর্ণ হয়ে যায় পরে বাদামী রং ধারণ করে। এবাবে এককের পর এক ভিতর থেকে বাইরের দিকে পুরাতন পাতা আক্রান্ত হতে থাকে, কেন্দ্রস্থলের পাতাগুলোর বোটা আলগা হয়ে ঝুলে পড়ে এবং মাঝ খানটা পাতাশুন্য হয়ে পড়ে ।

 

প্রতিকার :

# গাছ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা।

# আক্রান্ত নারিকেল গাছ সংগ্রহ করে মাটিতে পুতে বা পুড়িয়ে ফেলা।

# আক্রান্ত গাছে প্রতি লিটার পানিতে ৪ গ্রাম সিকিউর বা কুপ্রাভিট বা ২.৫ গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ বা বর্দোমিকচার (১%) মিশিয়ে কুঁড়ির গোড়ায় স্প্রে করা।


লক্ষণ : কান্ড ফেটে রস বা কষ বের হয়।

 

প্রতিকার : আক্রান্ত বাকল চেছেঁ বোর্দ পেস্ট বা আলকাতরা লাগিয়ে দেয়া। অথবা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করা।


এর আক্রমনে নারিকেলের গায়ে ফাটল দেখা দেয়।

এর প্রতিকার হল

১. গাছের ডগায় স্প্রে করে একে পুরোপুরি দমন করা যায় না তাই একটি পলিথিনের ব্যাগে ওমাইট নিউরন নামক মাকড় নাশক সমপরিমান পানিতে মিশিয়ে তাতে আক্রান্ত গাছের ৪-৫ টি অক্ষত শিকড় চুবিয়ে রাখতে হবে। ১৫ দিন পর পর মিশ্রণটি পরিবর্তন করে নতুন মিশ্রণ দিতে হবে। এভাবে ২-৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।

 


ক্ষতির লক্ষণ

ছোট আকৃতির এ পোকা গাছের কচি পাতা হতে রস চুষে খেয়ে গাছের ক্ষতি করে । এরা দুভাবে ক্ষতি করে থাকে । প্রথমতঃ রস চুষে খাওয়ার ফলে গাছের জীবনীশক্তি হ্রাস পায় । দ্বিতীয়তঃ রস চুষে খাওয়ার সময় এরা গাছের রসের মধ্যে এক প্রকার বিষাক্ত পদার্থ অন্তঃক্ষেপ করে । ফলে আক্রান্ত পাতা, ডগা ও ফলের উপর হলদে দাগ দেখা যায় । মারাত্মকভাবে আক্রান্ত গাছের সমস্ত পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে

 

সমন্বিত ব্যবস্থাপনা

সম্ভব হলে পোকাসহ আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা

হাত দিয়ে পিশে বা ব্রাশ দিয়ে ঘষে পোকা নিচে ফেলে মেরে ফেলা

আক্রমণের মাত্রা মারাত্মক হলে সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে আক্রান্ত গাছে ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা ফেনট্রোথিয়ন ৫০ ইসি অথবা ক্লোরপইরিফস ২০ ইসি এর যে কোন একটি ১ মিলিলিটর পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে এ পোকা দমন করা যায় ।